প্যাডম্যান শোভন মুখার্জী জেনারেলদের প্রতি সরকারের বৈষম্যে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে পথে বসলেন
1 min read
শর্মিষ্ঠা মুখার্জী: ভোটমুখি রাজনীতি করতে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি চাকুরির পরীক্ষায় ও বিভিন্ন দপ্তরের খালি পদে আসন সংখ্যায় জেনারেলদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ হয়ে আসছে। কিন্তু কি কেন্দ্র,কি রাজ্য সরকারে যখন যে শাসকদলই ক্ষমতায় আসুক, জেনারেলদের প্রতি কখনই সদর্থক ভুমিকা নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। আর্থিক দিক থেকে দুর্বল শ্রেনীকে সংরক্ষণের আওতায় আনার পরিবর্তে ৭০ বছর ধরে শুধু মাত্র এসসি,এসটি ও ওবিসিদেরই সংরক্ষণের আওতায় রেখে যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি জেনারেলদের নির্দিষ্ট আসনেও এসসি এসটি অন্তর্ভুক্ত প্রার্থীরা অংশ নিতে পারেন। ফলে সে ক্ষেত্রেও বঞ্চিত হচ্ছেন জেনারেলরা। চাকরির পরীক্ষায় বসার জন্য যে ফিস্ নেওয়া হয় সেখানেও এই বৈষম্য প্রকট। জেনারেল প্রার্থীদের তুলনায় সংরক্ষিত প্রার্থীদের ফিস নামমাত্র, কোথাওবা সংরক্ষিত প্রার্থীদের ফিস দিতেই হয় না। সাধারণ বিত্তের জেনারেল বেকার প্রার্থীদের নাম মাত্র খালি পদে শুধু মাত্র আবেদন পত্র জমা দিতে দিতেই ফতুর হওয়ার জোগাড়। জেনারেলদের কাট অফ সহ প্রায় সব ক্ষেত্রেই ছাড় পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাদের রীতিমতো পড়াশুনা করে পরীক্ষায় নামমাত্র আসনে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিজের আসন সুনিশ্চিত করতে হয়। বহু বার মিডিয়ার মাধ্যমে, আবেদন নিবেদনের মাধ্যমে এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও শুধু মাত্র ভোটকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সব সময় যখন যে সরকারে থেকেছে সেই সরকারই অবজ্ঞা করে এসেছে। কোনো সময়েই গুরুত্ব পায়নি যে, জেনারেল কাস্ট মানেই উচ্চ বিত্ত নয়, আর সংরক্ষিত শ্রেনীর মানেই গরীব নয়। ঠিক সেই কারনেই সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে রাস্তায় বাটি হাতে ভিক্ষা করতে বসলেন কলকাতার প্যাড ম্যান শোভন মুখার্জী। আশুতোষ কলেজের ভূগোল বিষয়ের কৃতী ছাত্র শোভন শহরের প্রতিটি মহিলা পাবলিক টয়লেটে স্যানিটারি প্যাড ভেন্ডিং মেশিন বসিয়ে কলকাতার প্যাড ম্যান হিসেবে সুপরিচিত মুখ। একই সঙ্গে বেসরকারি বাসে তৃতীয় লিঙ্গের যাত্রীদের জন্য “ত্রিধারা” সংরক্ষিত আসনও মূলত তাঁরই উদ্যোগে। এহেন প্যাড ম্যান শোভন মুখার্জী হঠাৎ ভিক্ষা করছেন কেন? একটাই কারণ, সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণের প্রতিবাদে। সেই সঙ্গে শুধু চাকরি পাওয়াতে বৈষম্যই নয়, চাকরির পরীক্ষা বাবদ দেওয়া ফি তেও এস সি, এস টি, জেনারেল ঘৃন্য বিভাজন। বহু সময়েই মেধাবী অথচ আর্থিক ভাবে দুর্বল জেনারেল কাস্ট টাকার অভাবে ফি জমা দিয়ে পরীক্ষায় বসতেও পারেননা। আর সেই দিক মাথায় রেখে অন্ততঃ এরকম দু এক জন জেনারেল কাস্টের অসহায় পরীক্ষার্থীকেও যদি ভিক্ষার টাকায় সাহায্য করা যায়, সেই জন্যই এই মহৎপ্রাণ শোভোনের অস্থায়ী ভিক্ষাবৃত্তি সার্থক এবং একই সাথে শিক্ষনীয়। যদিও এরপরও কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের চৈতন্য হবে কিনা সে নিয়েও অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।